বাংলাদেশে স্টারলিং নিয়ে বড় সুখবর

বাংলাদেশে স্টারলিং নিয়ে বড় সুখবর ঢাকা, ৬ মে ২০২৫:

বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করল—বিশ্বখ্যাত স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা Starlink অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। এটি ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স (SpaceX) পরিচালিত উচ্চগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রকল্প, যা ইতোমধ্যেই পৃথিবীর বহু দেশে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্প্রতি স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছে এবং ২০২৫ সালের মাঝামাঝি বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার কথা রয়েছে।

📡 কী এই স্টারলিংক?

স্টারলিংক হলো একটি লো-আর্থ-অরবিট (LEO) স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক, যা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সক্ষম। বর্তমানে এটি ৬,০০০+ এর বেশি স্যাটেলাইট চালু করেছে এবং দিনে দিনে তা আরও বাড়ছে।

🌍 বাংলাদেশে কী পরিবর্তন আসবে?

স্টারলিংকের আগমনে বাংলাদেশের প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবস্থায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে:

• দূরবর্তী অঞ্চলে দ্রুত ইন্টারনেট: পার্বত্য এলাকা, চরাঞ্চল, দ্বীপ বা সীমান্তবর্তী এলাকায় যেখানে ফাইবার অপটিক কভারেজ দুর্বল, সেখানে স্টারলিংক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।

• অনলাইন শিক্ষায় বিপ্লব: দুর্গম অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা পাবেন নিরবচ্ছিন্ন অনলাইন ক্লাস ও ডিজিটাল লার্নিং সুবিধা।

• টেলিমেডিসিন ও ই-কমার্সে প্রসার: স্বাস্থ্যসেবা ও গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি বড় সুবিধা হতে যাচ্ছে।

• ডিজিটাল বাংলাদেশে আরেক ধাপ অগ্রগতি: সরকারের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

💸 সম্ভাব্য খরচ ও পরিষেবা

স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারে প্রাথমিকভাবে একটি ডিশ টার্মিনাল ও মডেম প্রয়োজন হবে, যার খরচ প্রায় ৪০,০০০–৫০,০০০ টাকা হতে পারে। মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি হতে পারে ৫,০০০–৬,০০০ টাকা। তবে সরকার যদি ভর্তুকি দেয়, তবে এটি আরও সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আসবে।

🤝 সরকারের ভূমিকা

বিটিআরসি জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বের (PPP) মাধ্যমে স্টারলিংকের সেবা প্রাথমিকভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। এর পাশাপাশি সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্যও সীমিত পরিসরে চালু করা হবে।

🗣️ বিশেষজ্ঞদের মত

টেলিকম বিশেষজ্ঞ ড. ফারহানা ইসলাম বলেন,

“স্টারলিংক বাংলাদেশের ইন্টারনেট চিত্র বদলে দিতে পারে, বিশেষ করে যেখানে মাটির নিচে তার টেনে ইন্টারনেট পৌঁছানো অসম্ভব।”

✅ উপসংহার

বাংলাদেশে স্টারলিংকের আগমন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে চলেছে। এটি শুধু ইন্টারনেট নয়, বরং সমগ্র ডিজিটাল সমাজ ব্যবস্থার রূপান্তর ঘটাতে সহায়ক হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও প্রশাসনে এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে আমূল পরিবর্তন আনবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।